উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০/০৬/২০২৪ ১০:৪৭ এএম , আপডেট: ৩০/০৬/২০২৪ ১০:৫০ এএম

চট্টগ্রামের সরকারি খাদ্যগুদামগুলোতে চাল-গম বোঝাই এবং খালাসের জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের ‘বকশিশ’ দিতে হয়। না হলে কোনো ট্রাকের চাল কিংবা গম গুদামে ঢুকবে না, গুদাম থেকে বেরও হবে না। চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর ও দেওয়ানহাটের সরকারি কেন্দ্রীয় খাদ্যগুদাম (সিএসডি) এবং কক্সবাজার, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ স্থানীয় খাদ্যগুদামে (এলএসডিতে) শ্রমিকদের নামে ট্রাকপ্রতি ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন সংশ্লিষ্ট গুদামের শ্রমিক সরদার।

গুদামে চাল-গম বোঝাই ও খালাসের জন্য সরকার ঠিকাদারের মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করে। সেই মজুরির বাইরে শ্রমিকেরা জোর করেই এই বকশিশ আদায় করছেন বলে তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। তাঁরা এ বিষয়ে গত ১২ মে খাদ্য বিভাগের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক বরাবর এক চিঠি দিয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দোলন দেব।

ঠিকাদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইদুর রহমান বলেন, ‘খাদ্যগুদামগুলোতে উচ্চ দামে হ্যান্ডলিং লেবার ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সরকার বিল দিচ্ছে। আমরা পরিবহন ঠিকাদার কেন বকশিশের নামে টাকা দেব? ইতিমধ্যে রাজশাহী অঞ্চলে এসব চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে বকশিশের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা চাল-গমের বেশির ভাগই বন্দর থেকে সরাসরি দেশের বিভিন্ন স্থানের এলএসডিতে পাঠানো হয়। তবে সংকটকালের জন্য কিছু অংশ জমা রাখা হয় সিএসডিতে। আবার সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প কিংবা কর্মসূচির চাল-গম সিএসডি এবং এলএসডি থেকেই নেওয়া হয়। এভাবে সারা দেশের ৬৩২টি এলএসডি এবং ১১টি সিএসডিতে খাদ্য আনা-নেওয়া চলে প্রায় সারা বছরই। তালিকাভুক্ত শ্রমিক ঠিকাদার প্রতিদিনের সরকারনির্ধারিত শ্রমিক মজুরি নিজ তহবিল থেকে পরিশোধ করেন। মাস শেষে জেলা বা বিভাগের খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওই ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করেন। এ খাতে সরকারের খরচ বছরে ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকা।

গুদাম সূত্রে জানা গেছে, একটি ট্রাক গুদামে ঢোকার পর তিনটি জায়গায় বকশিশ দিতে হয়। প্রথমে গেটের নিরাপত্তাকর্মীকে ৫০ টাকা, ওজন স্কেলের কর্মীকে ১০০ টাকা এবং শ্রমিকদের ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। ক্ষেত্র বিশেষ আরও বেশি টাকা পরিশোধ করতে হয়।
দেওয়ানহাট সিএসডি গুদামের শ্রমিক ঠিকাদার মাহমুদুল হক বলেন, ট্রাকে ওজনের বেশি মাল থাকে বলে অথবা বেশি কাজ করানো হয় বলেই বকশিশ দিতে হয়। চাল-গম ওঠানো-নামানোর জন্য শ্রমিকেরা প্রতি টনে মজুরি পান কমিশনসহ ১৭২ টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি ট্রাকে (১৫ টন পরিমাণ) বকশিশ ১ হাজার টাকা। এটাই বকশিশের নির্ধারিত দর বলে জানান একাধিক পরিবহন ঠিকাদার।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়সার আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কলে দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দোলন দেব শ্রমিকদের নামে চাঁদা আদায় করার কথা স্বীকার করে বলেন, এ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এ ছাড়া আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি। সুত্র; আজকের পত্রিকা

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান ঠেকাতে বিজিবির বুলেটপ্রুফ গাড়িতে টহল

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পয়েন্টে মরিয়া হয়ে সক্রিয় থাকা রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আর চোরাচালান বন্ধে ...